শরীরের কবিতা : তুষ্টি ভট্টাচার্য


শৃঙ্গার

মাখামাখি -
আমার বড্ড বেশি মাখামাখি ওর সঙ্গে।
যেদিন প্রথম ছুঁই ওকে –
নরম আর গরম
আর তুলতুলে
আঙুলে জড়িয়ে ছিল ও...
         
স্পর্শ যেন হাত ধুয়ে ফেললেও যায় না
চুমু খেলে আরও বেশি মেখে যায়
ঠোঁটে, জিভে, কন্ঠনালীতে – নাভি কামড়ে ধরে
কী ভীষণ মাখামাখি আমাদের!

মাখামাখি –
সন্দেশের আস্তরণ জুড়ে লেগে থাকা
আঠালো, কামার্ত এক আকুতি! 



নেশা



ক্যাপুচিনোর গন্ধ আর উষ্ণ ধোঁয়া দেখলে
খুব শীত করে।
রেড ওয়াইন আর রামের বোতল পাশাপাশি রয়েছে 
চুমু আর চুমুকে নেশা হচ্ছে না।
                          
আমার খুব শীত করে ...
আগুন নিভিয়ে দিয়ে চলে যাই
তিরধনুক নিয়ে জেগে থাকা যোদ্ধা তখন
সপ্তর্ষীমণ্ডল পাহারা দিচ্ছে।

কুয়াশার ঘেরাটোপ থেকে আচমকাই
বিরিয়ানির গন্ধ ডেকে ওঠে।
 



ধর্ষণ

চকচকে চামড়ায় আরও একটু তেল মাখানো হল
ধারালো ছুরির ডগা দিয়ে
নিতম্বের উঁচু হয়ে থাকা মাংস পিন্ড খুবলে নিয়ে 
যৌনাঙ্গ বরাবর লম্বালম্বি চিরে দিলাম দেহটা
ভেতরের তুলতুলে মাংসে গুঁজে দিলাম রসুনের কোয়া
এরপর আগুনের লকলকে শিখায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পোড়ানো
চামড়া পোড়া গন্ধে ঘর ভরে যাচ্ছে –
কুঁকড়ে ছোট হয়ে আসছে বডি –
আমার খুব গান পাচ্ছে -
আহা বড় জ্বালাপোড়া! জলে ডুবে যদি একটু ......
         
খুঁটে খুঁটে তুলে ফেললাম পোড়া চামড়ার ছাল
নুন, লঙ্কা আর ঝাঁঝালো তেলের মলম দিয়ে
ভেতরের তুলতুলে মাংসটা চটকে মেখে
ওপরে ছড়িয়ে দিলাম সবুজ সরস টাটকা ধনেপাতা

অন্যরকম ফ্লেবার পেতে         
তেলে ভেজেও নিয়েছি কয়েকবার ওই চটকানো দেহকে

লুব্ধক বেগুন ধর্ষিত হওয়ার জন্যই জন্মায় –
এ কথা জেনে যাওয়ার পরে আমার কোন পাপবোধ নেই।  

34 comments:

  1. প্রথমটি শুভ জন্মদিন ..

    আর, ধর্ষণ ... খালি বলবো, এটা পাঠকের দায় পড়ে নেওয়া। না পড়লে, তারই ক্ষতি

    ReplyDelete
    Replies
    1. এটা যা বলেছ দাদা... একজন মানুষ না কি উনি? শালা অনুপম বলছে শক্তির পর আর কবিতা এগোয়নি? ও পড়েছে?? ওকে পড়াও। ভালো লাগবে না তো? লাগতে হবে না... ভালো লাগার জন্য কবিতা লেখা হয় না।

      Delete
    2. শান্তনু আর অভিষেক, দুজনকেই ধন্যবাদ আর ভালবাসা দিলাম

      Delete
  2. আহা । এই জন্যেই তুষ্টিকে ভালোবেসে ফেলি । ওর ধারে-কাছে যাবার মতন কোনো ইরটিসিস্ট কবিনিকে দেখছিনে । জিও মেরে রানি ।

    ReplyDelete
    Replies
    1. বেশি মাথায় তুলো না!

      Delete
  3. স্যালুট তুষ্টিদি। কী অবলীলায় শব্দযান তৈরি হল। আর গনগনে আগুনের মতো শরীরী কবিতা, যা আসলে শরীরের বাইরেরও এক কামার্ত আর্তনাদ। আর হ্যাঁ, জন্মোৎসবও ঘোষিত হয় প্রথম কবিতাটিতে। নেশা পায় খুব, যেমন কবির গান পায়। বেগুনের আগুনও ছুঁয়ে যায়। স্বাদে ও ইরোটিকায়।

    ReplyDelete
    Replies
    1. তুমি খুব ভাল পাঠক। ধন্যাব্দ

      Delete
  4. দারুণ! কবিতা আমার কাছে ক' অক্ষর গোমাংস। তবু ভাল লাগতে বাধ্য করল, না লাগা পর্য্যন্ত ছাড়ল না।

    ReplyDelete
  5. প্রথমটি দ্বিতীয়টি তৃতীয়টি।একটি অন্যটির প্রতিদ্বন্দ্বী।
    অদ্ভুত সব কবিতা।
    মল য়'দা ঠিকই বলেছেন।
    আমি শুধু 'কবিনি'শব্দ বাদ দিয়ে বলবো ধারেকাছে কেউ নেই।
    কেউ নেই।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আবারও বলি, এতটা মাথায় তুলবেন না। লজ্জা লাগে, ভয়ও

      Delete
    2. This comment has been removed by the author.

      Delete
    3. This comment has been removed by the author.

      Delete
    4. মাথায় তুলিনি।মলয়'দা 'কবিনি'লিখে একটা বিভাজন রেখা টেনেছেন।তা তিনি টানতেই পারেন।
      আমি শুধু সাহস করে সেই বিভাজন রেখাটাই মুছে ফেলতে চেয়েছি।
      আর কিছু না।
      শুভেচ্ছা নিবেন।

      Delete
  6. কী অসাধারণ শব্দচয়ন!! সত্যি স্পর্শ হাত ধুয়ে ফেললেও যাওয়ার নয়...

    ReplyDelete
  7. খাদ্য এবং খাদক নিয়ে কি ভয়ংকর শরীরি উচ্চারণ!... যে চিৎকার শুধুমাত্র শরীরে থেমে থাকেনা।

    ReplyDelete
  8. অসামান্য।

    ReplyDelete
  9. Pratham o Tritiota lajabab...

    ReplyDelete
  10. কবিতার শরীর ডিসেকশন যেন

    ReplyDelete
  11. কাটা ছেঁড়া আর পোড়ানো

    ReplyDelete
  12. পড়তে ভাল লাগল আপনার ইরোটিকবিতা...একবার পড়ার পর আর বোধহয় ফিরে আসা যায় না এগুলোর কাছে

    ReplyDelete
    Replies
    1. বুঝলাম না কে আপনি। যাই হোক, ফেরার দরকার কী!

      Delete
  13. দ্বিতীয় কবিতা ও শিরোনামছবি ভালো লেগেছে । কবির শব্দব্যবহার তারিফ করার মতো ।

    ReplyDelete
  14. ধর্ষণ কবিতাটি মন কেড়েছে

    ReplyDelete
  15. ধর্ষণ কবিতাটি মন কেড়েছে

    ReplyDelete