হাসিবুল আলম



জার্নি টু হ্যাভেন (ক্যামেলিয়া ক্রিস্টোফারকে-)।।
অবশ্যই অল্প না- কল্পও না, বরং দীর্ঘ, দীর্ঘ জল্পনা , ১৩ সেপ্টেম্বর, টিকেট কনফার্মড, রাতযাত্রা, মান, অভিমান, ঘুম-ঘুম, বাস টার্মিনাল, বসে থাকা ভোর, ১৫১ দিন পর আবার, সবুজ সিএনজি, ক্লান্তি, কোল্ডড্রিংক্স, রোদনদী, ওয়াটার বাস, চুপচাপ, পাশাপাশি, কফি, আরো কয়েক কাপ, বেনসন এন্ড হেজেস, নদী, ঢেউ, ঢেউ, ভিড়, দুপুর-মেঘ, বরিশাল অভ্যন্তরীণ নৌ বন্দর, ওয়াশ রুম, হুটখোলা রিক্সা, গীর্জা মহল্লা, আকাশ রেস্তোরা, মাছ-ভাত, ফুটপাত, নরম সবুজ তোয়ালে, আবার বাস, জার্নি টু হ্যাভেন, রোদ, শালিক-শালিক, ঘাম, আইস্ক্রীম, মিনারেল ওয়াটার, খাতা ছিঁড়ে পাখা, ভিড়, বাতাস, ক্যাকফনি, কাঁধঘুম, ফেরি পারাপার, হেডফোন, প্যসেঞ্জার, রেস্টলেস উইন্ড, এস.ডি. বর্মণ, অঞ্জন দত্ত- তোমার শহর মিথ্যে জানে না , সন্ধ্যা, চিবাতে থাকা ফ্রুটফিল, বাসের ওইটুক জানালা, ধুলো, অতঃপর- হাত-মুখ, স্নান, কালো টি-শার্ট, দুজনেই, এবং রূপচাঁদা, সিদ্ধ ভাত, শুটকি ভর্তা, কবিতা, মারিজুয়ানা, অন্ধকার, অন্ধকার, হাতে-হাত, পায়ে-পা, চোখে-চোখ, নাকে-নাক, পিঠে -পিঠ, অবসাদ, পায়েল, সমুদ্রখোসা, চিক চিক করে বালি- কোথা নাই ব্যথা? ক্যামন আছে আমার সোনাটা? এইভাবে- আইএসও, শাটার স্পিড, ঠিকঠাক পূর্ণিমা, পার্শ্ববর্তী ঝাউবন, লাল লাল দুষ্টু কাঁকড়া, গান, লেবুর বন, সমুদ্র, সূর্যাস্ত, সমুদ্র, সন্ধ্যা, সমুদ্র, চাঁদ, সমুদ্র, ট্রাইপড, সমুদ্র, রূপচাঁদা, সমুদ্র, মহুয়া, সমুদ্র, অবসাদ, সমুদ্র, বসে থাকা, সমুদ্র, শারীরিক ঘ্রাণ, সমুদ্র, ঠোঁট, সমুদ্র, তুমি, সমুদ্র, আমি, ---এবং চুমু, চুমু, চুমু।


একান্ত অক্সিজেন।।
তোমার ঠোঁটে বাতাস, আগুন জ্বালাচ্ছে, সামান্য অক্সিজে, বেঁচে থাকা এই-ই, কি রকম ভাবে, থার্মোমিটারে, দাগে, জীবন- রেখা টানা জ্বরে, জিওম্যাট্রি, সম্পাদ্যে-উপপাদ্যে, ক্যামন অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে, পীথাগোরাস, ইউক্লিড, কোপার্নিকাস, আকাশ কিংবা মহাকাশ, একপাতা অ্যাসপিরিন খেয়ে, ঝিম মেরে থাকে, জোড়ে-বিজোড়ে, কাকে কতটুকু, সকালে-আকালে, কাছে পাওয়া যাবে? মৃত্যু তোমার, দুই কাঁধে থাকে, ডোন্ট টাচ মি, টানানো সাইনবোর্ড, মানুষের চোখ, ওদিকেই বেশি টানে, ধূমপানই স্বাস্থ্যকর, কেউ কি জানে? ধোঁয়ারা কতোটা, যত্নসহকারে, দুঃখগুলোকে, নির্মাণাধীন মানুষের ভেতরে, কাগজ চাপা দিয়ে, হেঁটে যেতে বলে, হাঁটতে-হাঁটতে, কাঁদতে-কাঁদতে, সন্ধ্যা ৭টায়, ভূগোল বইয়ের ৫৭ পাতায়, ইথিওপিয়ায় তুমি, গৃহযুদ্ধ দেখবে, গৃহরা সেখানে - যুদ্ধ করে, যুদ্ধ করে, যুদ্ধ করে, হাতির দাঁতের অলংকার, অবগোলাপ, সাবমেরিন, ইথিওপিয়ায় তুমি, সন্ধ্যা ৭ টায়- মানুষ মরে, মানুষ মরে, মানুষ মরে, গাড়িচাপা, ছুরিকাঘাত, আত্মহত্যা, তোমার ঠোঁটে বাতাস, আগুন জ্বালাচ্ছে, এখন দরকার- অক্সিজেন, সামান্য অক্সিজেন, একান্ত অক্সিজেন।


চাঁদের যক্ষ্মা।।
চাঁদের যক্ষ্মা, নেই রক্ষা, নক্ষত্রগুলো নিহত, আকাশ অধিগ্রহণে, মানুষেরা, মানুষেরা, একের মধ্যে অন্যতম, সবাই, সবাই, সবাই, উড়ে যাচ্ছে, দুঃখটানা মেঘ, চারতলার চিলেকোঠা, এদেরকে দেখছি-২১ বছর ২৬১ দিন, অভিজ্ঞতা ০, মাঝদুপুরে, বজ্রসহ বীর্যপাত, তবু লাইফ ইন্সুরেন্স, মাসপ্রতি ৫০০, স্বপ্ন, দ্বন্দ্ব, অন্ধ, এটাকে জীবন বলে, নলে ও বন্দুকে, তাঁরা বাঁচে, বাঁচে, বাঁচে, আভাসে, অভ্যাসে, ফ্লাশব্যাকে, সামাজিক দৃশ্য, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাগার, ঘটনা, অপঘটনা, নৈমিত্তিক সম্ভাব্যতা, প্লিজ সাঁতার শিখুন, কথার অনুশীলন করুন, ধমক দিন, ধমক দিন, তাকে ধমক দিন, ছায়া, ছায়া, যিনি ছায়া, ছাউনি, রিংটোন, ইঙ্গিত, গোঙানি, দুটো মানুষ দুই দিকে, ছিটকে গ্যালো, সরে গ্যালো, গ্যালারি ভর্তি, গ্যালারি ফাঁকা, ক্লান্ত, সংখ্যাতত্ত্ব, শরীরপাত, অধঃপতনে, নত নয়নে, বিভাজন শেষে, ভুলে যায়, যে যাকে পারে, প্রসাবের গন্ধ, নাক বেয়ে নামে, নেমে আসছে, নেমে আসছে, নক্ষত্রাদি, দোকান বন্ধ, চাঁদের যক্ষ্মা- জীবাণু, জীবাণু জীবাণু, জয়তু।

7 comments:

  1. আমার দুর্দান্ত লেগেছে। এই যে একটা পর একটা শব্দ, যা আসলে তালিকার মতো থেকে যাচ্ছে, ভেসে থাকছে, এবং একটার উপর আরেকটা উঠে আসছে যেন, একটা চিত্রের উপর আরেকটা চিত্র ও চিত্রকল্প বা ঘটন-অঘটন উঠে আসছে আর হামলে পড়ে একে অপরকে নিজের করে নিচ্ছে বা শুষে নিচ্ছে … এই চলন, এই কথাচিত্র আমার মুগ্ধতা ছিনিয়ে নিল। স্যালুট কবি।

    ReplyDelete
  2. kothao ekta kaaj cholchhe... du-tin te haturir aghat, dhatob shobdo, keu shuneo na shunte paare. ba upekhya korte paare. kintu lagatar haaturir awaj kimba dhatob shobdo bhese ele eksomoy taake gurutwo dite mon baadhyo. tarpor ki protikriya aasbe seta moner byapar. kintu 'na shona'-r upekhya ta sombhob thake na.

    Aamar ei kobitaguli porhe setai mone hoyechhe.
    Journey to Heaven beshi bhalo legechhe.

    ReplyDelete
  3. ।। 'বাক্ ১০৪'-এ হাসিবুল আলমের কবিতাগুলো কি কারো ভালো লাগল? ভালো লাগার কবিতা এগুলো নয়। এই কবিতা থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়াতে হবে। তাহলে কবির আত্মার আঁচড়গুলো ক্ষতচিহ্নগুলো আপনার চোখে স্পষ্ট হতে শুরু করবে। মাধুর্যের আশা না করাই ভালো, কারন আমার মনে হয়েছে হাসিবুলের কলমে মাধুর্যের আরেক নাম কান্না। অদীক্ষিত পাঠক এই কবিতাকে প্রাণহীন শব্দসমষ্টি ভাবতে পারে, সেই সুযোগ তার রয়েছে। আমার মনে হয়েছে কবিতায় মন্তাজের অসামান্য প্রয়োগ। এই কবিতাভাষা সাইলেন্ট সিনেমার ভাষাকে মনে করিয়ে দ্যায়, কথা বলতে বলতে। হাসিবুলের লেখাগুলো সংগ্রহ করে দেওয়ার জন্য আমি মাসুদার রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞ রইলাম।।

    ReplyDelete
  4. জার্নি টু হেভেন।
    মারাত্মক লাগলো

    ReplyDelete
  5. এইরকম কবিতার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকি যার ভেতর কিছু বাঁকবদল থাকে

    ReplyDelete
  6. এ কবিতা ভালো লাগাতে হয় না, পেরেকের মত শব্দ, হাতুড়ির আঘাতে বসে যায় মনের গভীরে। তারপর অনুরণন।

    ReplyDelete